মিয়ানমার দিয়েছে গুলি, বাংলাদেশ দিচ্ছে খাবার

‘২৫ আগস্ট ভোর রাতে আকস্মিকভাবে পার্বত্য জেলা বান্দরবানের তুমব্রু সীমান্তের মিয়ানমারের ঢেকিবুনিয়া গ্রামে হামলা শুরু করে দেশটির সেনাবাহিনী। নির্বিচারে গুলির পাশাপাশি রোহিঙ্গাদের বাড়িঘরে আগুন দেওয়া শুরু করে তারা। ঘুমন্ত মানুষগুলো আকস্মিক আক্রমণে যখন হতবিহ্বল, তখন হ্যান্ডমাইকে শুনতে পান সেনাবাহিনীর ঘোষণা, ‘বাঙালি সন্ত্রাসীরা, তোমাদের দেশ মিয়ানমার নয়। তোমাদের দেশ বাংলাদেশ। তোমরা সেই দেশে চলে যাও।’

গুলি আর আগুনের মুখে টিকতে না পেরে আশপাশের কয়েক গ্রামের মানুষ রাতের আঁধারেই বেরিয়ে পড়েন। পাহাড়ি পথ বেয়ে মিয়ানমারের কাঁটাতারের বেড়া ডিঙিয়ে এক কাপড়ে আশ্রয় নেন তুমব্রু সীমান্তের নো-ম্যানস ল্যান্ডে। তারপর থেকে বাংলাদেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিজিবির দয়ায় বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে নো-ম্যানস ল্যান্ড থেকে দেশের ভেতরে এনে তাদের হাতে ত্রাণ তুলে দিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
মিয়ানমারের ঢেকিবুনিয়া থেকে পালিয়ে নো-ম্যানস ল্যান্ডে আশ্রয় নেওয়া আহমদ শফী (৪৫) ত্রাণ হাতে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে সেদিনের দুঃসহ স্মৃতির কথা তুলে ধরেন।
কান্নাজড়িত কন্ঠে নিজের ভাষায় আহমদ শফী বলেন, ‘আঁরা বার্মার মানুষ। বার্মার মিলিটারি আঁরারে গুলি গইরয্যে, ঘরত অইন দিয়ে। আর বাংলাদেশর মানুষ আঁরারে মহব্বত গরি আনিয়রে খানা দের।’ (আমরা মিয়ানমারের মানুষ। মিয়ানমারের মিলিটারি আমাদের গুলি করেছে। ঘরে আগুন দিয়েছে। আর বাংলাদেশের মানুষ ভালোবাসা দিয়ে আমাদের এনে খাবার দিচ্ছে।)
গুলির মুখে পালিয়ে আসার পথে মগরা কেটে দুই টুকরো করে ফেলে ঢেকিবুনিয়া গ্রামের তাজুলের বাবা সিদ্দিকুল ইসলামকে। মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের যখন তাজুলের মাথায় হাত দেন তখন কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।
তাজুল বলেন, বাংলাদেশের একজন মন্ত্রী আমাদের খাবার দেওয়ার জন্য এসেছেন। বাংলাদেশ সরকার, বিজিবি আমাদের জন্য অনেক করছে।
সোমবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল সাড়ে ১১টার দিকে মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী গ্রাম তুমব্রুতে

Comments

Popular posts from this blog

জাতিসংঘে ফের মিয়ানমারের মিথ্যাচার, অভিযোগ অস্বীকার

নিউ ইয়র্কে ব্যতিক্রমী নৌ-ভ্রমণ

Burning Rohingya Burning Myanmar